সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:

ফিলিস্তিনিের নিরীহ ও বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি ইসরাইল এর বর্বরোচিত বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সিলেটে ফিলিস্তিন সংহতি সমাবেশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম- সিইএইচআরডিএফ ও উজ্জীবন যুব কল্যাণ সংঘ।

ফেঞ্চুগঞ্জ বিয়ালি বাজার গোল চত্বরে আয়োজিত সভায় সিইএইচআরডিএফ ও উজ্জীবন যুব কল্যাণ সংঘের উপদেষ্টা এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হারুনুর রশিদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেঞ্চুগঞ্জ মোহাম্মদীয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ফরিদ উদ্দিন আতাহার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা সৈয়দ সোলাইমান আহমদ, মুহিবুর রহমান, ফখরুল ইসলাম ছোটন, সেলিম আহমেদ।

সিইএইচআরডিএফ সিলেট সার্কেলের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর জুবায়ের আহমেদ শুভর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট ফিলিস্তিন সংহতি সমাবেশ তত্ত্বাবধায়ক ও সিইএইচআরডিএফ এর এক্সটার্নাল ডিভিশনের ফিল্ড সচিব আব্দুল্লাহ আল মুবিন।

এতে বক্তারা বলেন ইসরাইলি পণ্য আমদানি ও ক্রয় বিক্রয় বন্ধ করতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতির মোকাবেলায় ফিলিস্তিনি মুসলমানদের সাথে বাংলার মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ তারা আরো বলেন রাষ্ট্রীয়ভাবে যেন ইজরায়েলের সকল পণ্য আমদানি বন্ধ করে দেয়া হয় এবং মুসলমানদের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে সরকারকে আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা হারুনুর রশীদ বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব ফিলিস্তিনে বর্বরতার প্রতিবাদ ও নিন্দা না জানিয়ে বরং খাদ্য সরবরাহ , বিদ্যুৎ সংযোগ, মেডিকেল সাপোর্ট সব ধরনের ত্রাণসামগ্রী বন্ধ করে দিয়ে প্যালেস্টাইনকে অবরোধ করে রেখেছেন। যা পশ্চিমা বিশ্বের মানবতার চরম বিপর্যয় বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মানবাধিকার সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য এক ও অভিন্ন। কিন্তু, পশ্চিমা বিশ্বের নিরবতা এবং ইসরাইলকে উসকিয়ে দেওয়া অনেকটা কোভিড-১৯ এর পরবর্তী সময়ে পৃথিবীকে আরও বেশি সংকটের দিকে ধাবিত করার মত। যা পৃথিবীর এই অস্থির সময়ে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি ইসরাইলি ইহুদি জনগোষ্ঠীর অতীত ইতিহাস স্মরণ করে তাদের রাষ্ট্রহীনতা নিয়ে কথা বলেন। তিনি জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের প্রতি ফিলিস্তিনের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আতাহার বলেন, আমাদের সবাইকে ইসরাইলের বর্বতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। তিনি ফিলিস্তিনবাসীর প্রতি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সুপার মিডিয়া’র কল্যাণে সমগ্র পৃথিবী দেখছেন ইসরাইল ইতিমধ্যে গাজা উপত্যকায় সিরিজ বোমা হামলা করে ইতিহাসের এই তৃপ্তিভূমিকে গোরস্তানে পরিণত করছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা সৈয়দ সোলাইমান আহমদ বলেন, ইসরাইল নিরীহ ফিলিস্তিনের উপর আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ ফসফরাস বোমা নিক্ষেপ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইনকে অমান্য করেছেন। পাশাপাশি, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত ন্যাক্কারজনক অপরাধ সংগঠিত করেছেন।যা এরকম একটি আধুনিক সময়ে এসে কোনোভাবে কাম্য নয়।

জনাব মুহিবুর রহমান বলেন, প্যালেস্টাইন যুগের পর যুগ ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের দ্বারা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে।কিন্তু,গত একদশক ধরে যা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। হামাস প্রতিরক্ষামূলক প্রতিবাদ করলে ইসরাইল আরও চরম মাত্রায় আগ্রাসী হয়ে তার প্রতিক্রিয়া দেখায়।

ফখরুল ইসলাম ছোটন বলেন,গত ৫ দিনে ইসরাইল নারী,শিশু,বয়স্ক সহ অন্তত ২.৫ হাজার প্যালেস্টাইনের সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছেন।পাশাপাশি ৫ হাজারেও বেশি সাধারণ নাগরিক আহতাবস্থা রয়েছে।অথচ,প্যালেস্টাইন তরুণরা রাসায়নিক অস্ত্র, ফসফরাস ও সিরিজ বোমা হামলার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলছে কেবল পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে।

সেলিম আহমেদ বলেন, আমরা সিলেট হতে ফিলিস্তিনবাসীর জন্য সংহতি জানাচ্ছি। তিনি ইসরাইলকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বিচারের আওতায় আনার জন্য বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানান।

সিইএইচআরডিএফ এর এক্সটার্নাল ডিভিশনের ফিল্ড সচিব আব্দুল্লাহ আল মুবিন বলেন, গাজসবাসীকে ন্যূনতম মানবিক সহায়তা হতে বঞ্চিত করে ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।

উপস্থিত ছিলেন সিইএইচআরডিএফ ফেঞ্চুগঞ্জ ফোরামের ক্লাইমেট চেঞ্জ সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর হোসেন নাহিদ, সহ-ব্যবস্থাপক (মিডিয়া) আব্দুল্লাহ মুহিন, এক্সিকিউটিভ মেম্বার আজিজুল ইসলাম, জবলু মিয়া, শিপন আহমদ, মোঃ দেলোওয়ার হোসেন মাছুম, নাইম আহামদ উজ্জীবন যুবকল্যাণ সংঘের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম শিপু, বর্তমান সভাপতি শরীফ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হক।

এতে শতাধিক স্থানীয় জনগণ, নাগরিক প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, মানবাধিকার কর্মী, বয়স্ক, নারী, তরুণ, কিশোর ও শিশুরা উপস্থিত ছিল।